• রোববার ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ||

  • ভাদ্র ২৪ ১৪৩১

  • || ০৩ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

আজকের খুলনা

দাকোপে ছড়িয়ে পড়ছে গবাদি পশুর লাম্পি স্কিন রোগ

আজকের খুলনা

প্রকাশিত: ১৫ জুন ২০২৪  

খুলনার দাকোপে সর্বত্রই ছড়িয়ে পড়ছে গবাদি পশুর লাম্পি স্কিন ডিজিজ (পক্স) রোগ। গত দুই মাসে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে অসংখ্য গরুর মৃত্যু হয়েছে। অধিকাংশ গরুর মালিকরা এ রোগের প্রতিরোধক ও প্রতিষেধক কোন ভ্যাকসিন সংগ্রহ করতে না পেরে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন।
উপজেলা প্রাণী সম্পদ দপ্তর ও ভেটেরিনারি হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ২০২৩-২৪ অর্থ বছরের তথ্যানুযায়ী এই উপজেলায় ৫৮ হাজার ৫৬০টি গরু, ১৬৫টি মহিষ, ৫২ হাজার ২০০টি ছাগল ও ২২ হাজার ১৫০টি ভেড়া রয়েছে। খরা ও বর্ষা মৌসুমে এই রোগগুলি বেশি হয়ে থাকে। এবছর অতিরিক্ত খরার কারণে উপজেলার সর্বত্রই ছড়িয়ে পড়েছে বলে এলাকার একাধিক কৃষক ও গরুর মালিকদের সাথে আলাপ করে জানা গেছে। অভিযোগ রয়েছে রোগটি ছড়িয়ে পড়লেও মাঠে দেখা যাচ্ছে না প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তরের কোন কর্মকর্তাকে। ফলে বাধ্য হয়ে গ্রাম্য হাতুড়ে ডাক্তারের কাছে গবাদি পশুর চিকিৎিসা সেবা নিচ্ছেন। এই সুযোগকে পুজি করে ওই হাতুড়ে ডাক্তাররা ভেজাল ঔষুধ ব্যবহার করে গরুর মালিকদের কাছ থেকে হাতিয়ে নিচ্ছে অতিরিক্ত অর্থ। বিশেষ করে লাম্পি স্কিন রোগে আক্রান্ত দুই একটি গরু চিকিৎসার পর ভালো হলেও অধিকাংশ গরু মারা যাচ্ছে। এ পর্যন্ত অসংখ্য গরুর মৃত্যু হয়েছে এবং প্রতিদিনই মৃত্যু হচ্ছে বলে জানা গেছে। ফলে হাজারো কৃষক ও গরুর মলিকরা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন। একাধিক কৃষক ও গরুর মালিকের সাথে আলাপ করে জানা গেছে প্রাণঘাতি সংক্রমন লাম্পি স্কিনের লক্ষণ প্রথমে গরুর জ¦র হয়। এরপর গায়ে গুটি গুটি হয়ে ফুলে যায়। পরে পেকে ফেটে গিয়ে পুজ বের হয় এবং ঘা হয়। এতে কয়েক দিনের মধ্যে গরু মারা যাচ্ছে। আবার চিকিৎসা দেয়ার পর কিছু গরু ভালও হচ্ছে।
চালনা এলাকার কৃষ্ণপদ বিশ^াস জানান, তার একটি গরু লাম্পি স্কিন রোগে আক্রান্ত হয়। প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তরের কোন কর্মকর্তাকে মাঠে না পেয়ে পরে বাধ্য হয়ে গ্রাম্য হাতুড়ে ডাক্তারের চিকিৎিসা বা পরামর্শ নিয়েছেন। এরপর কোন প্রতিকার না পেয়ে কবিরাজের পরামর্শ নিয়েছেন। এতেও ফল না পাওয়ায় প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তরের গিয়ে চিকিৎিসা নেয়। এতে সে মোটা অংকের অর্থ খরচ করেও গরু বাঁচাতে পারেননি। এমনকি তিনি প্রতিরোধক ও প্রতিষেধক কোন ভ্যাকসিনও দিতে পারেনি। কামনিবাসিয়া, খেজুরিয়া, বাজুয়া ও পানখালী এলাকার একাধিক কৃষক ও গরুর মালিকরা একই অভিমত ব্যক্ত করেন।
এব্যাপারে উপজেলা প্রাণী সম্পদ ও ভেটেরিনারি হাসপাতালের কর্মকর্তা ডাঃ বঙ্কিম কুমার হালদার বলেন, সাধারনত মশা, মাছি, ডাস মাছি থেকে এই রোগ ছড়িয়ে থাকে। এছাড়া লাম্পি স্কিন রোগের সরাসরি কোন ভ্যাকসিন নাই। অন্য একটি রোগের ভ্যাকসিন আছে। এই ভ্যাকসিন কিছুটা লাম্পি স্কিন রোগের কাজ করে। যারা আসছে প্রাপ্যতা সাপেক্ষে তাদের দেওয়া হচ্ছে। গত মাসেও ৩০০ জনকে দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া কৃষক বা গরুর মালিকদের নিয়ে উঠান বৈঠক করে সচেতনতা বৃদ্ধি করার চেষ্টা করছি।

আজকের খুলনা