• শনিবার ০৬ জুলাই ২০২৪ ||

  • আষাঢ় ২১ ১৪৩১

  • || ২৮ জ্বিলহজ্জ ১৪৪৫

আজকের খুলনা

সরকারের এআই-ভিত্তিক জিপিটি প্লাটফর্ম ‘জি-ব্রেইন` উদ্বোধন

আজকের খুলনা

প্রকাশিত: ৩ জুলাই ২০২৪  

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের উদ্যোগে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের অংশ হিসেবে একটি এআই-ভিত্তিক জিপিটি প্লাটফর্ম ‘জি-ব্রেইন (GBrain)’ তৈরি করা হয়েছে। জি-ব্রেইন এর পূর্ণরূপ হল গভর্নমেন্ট ব্রেইন। দেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতের এই যুগান্তকারী প্ল্যাটফর্মটির বর্তমানে ConstitutionGPT, BudgetGPT এবং StartupGPT এই তিনটি বিশেষ জিপিটি মডেলের সমন্বয়ে গঠিত হয়েছে যা সকলের জন্য একটি অত্যন্ত প্রয়োজনীয় সমাধান এর প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করবে।
আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজেন্স বা এআই প্রযুক্তির দুনিয়ায় এক অতুলনীয় আবিষ্কার। প্রযুক্তি যেভাবে পরিবর্তন হচ্ছে সেখানে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মুক্ত করে দিচ্ছে। সেই ধারাবাহিকতায় ওপেনএআই তাদের সর্বোত্তম হাতিয়ার চ্যাট জিপিটি দিয়ে পুরো বিশ্বকে চমকে দিয়েছিল। আমাদের বাংলাদেশের মোটামুটি সবাই এর ব্যবহার জানে।

তাই আমাদের প্রিয় বাংলাদেশও এমনই একটি চমৎকার উদ্যোগ নিয়েছে যা হলো ‘জি-ব্রেইন (GBrain)’। নিজেদের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো সরকারি উদ্যোগে শিক্ষার্থী, গবেষক, নীতিনির্ধারক, অর্থনীতিবিদ, উদ্যোক্তা, বিনিয়োগকারী এবং সাধারণ নাগরিকদের জন্যে এআই সংবলিত এই জিপিটি মডেলটি তৈরি করা হয়েছে, যা আমাদের দেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতে একটি নতুন অধ্যায়ের, একটি নবদিগন্তের সূচনা। এই জিপিটি মডেলগুলোর মাধ্যমে বাংলাদেশের সংবিধান, বাজেট নির্ধারণ, ও স্টার্টআপ প্রস্তুতির ক্ষেত্রে ব্যাপক ও সহজলভ্য তথ্যের অধ্যয়নও সম্ভব হচ্ছে। জি-ব্রেইন এর মাধ্যমে আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ থেকে স্মার্ট বাংলাদেশের যাত্রাকে আরও এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। এই উদ্যোগ আমাদের দেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতকে আরও শক্তিশালী করবে এবং আমাদের নাগরিকদের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সচেতনতা বাড়াবে। এটি আমাদের দেশকে আরও উন্নত ও সমৃদ্ধ করার লক্ষ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে প্রতিফলিত হবে বলে আমাদের বিশ্বাস।

আমরা জানি যে, জিপিটি এর পূর্ণরূপ হলো Generative Pre-trained Transformer। এখানে Generative বলতে এমন একটি মডেলকে বোঝায় যা টেক্সট বা লেখা তৈরি করতে পারে এবং Pre-trained এর অর্থ হলো এই মডেলের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে তথ্য বা ডেটা পূর্বেই লোড করা আছে। সবশেষে, Transformer হলো এই AI মডেলের আর্কিটেকচার বা গঠন। শব্দটি নিউরাল নেটওয়ার্কের একটি বিশেষ গঠন বা কাঠামোকে বোঝায় যা মডেলগুলোর অভিজ্ঞতার ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়।

এআই-ভিত্তিক জিপিটি প্লাটফর্ম ‘জি-ব্রেইন (GBrain)’ এর প্রথম মডেলটি হলো- সংবিধান জিপিটি (ConstitutionGPT)। স্মার্ট বাংলাদেশের অন্যতম স্তম্ভ হচ্ছে স্মার্ট নাগরিক। আর এই স্মার্ট নাগরিক হওয়ার একটি পূর্বশর্ত হচ্ছে সংবিধান সম্পর্কিত জ্ঞানার্জন। সেই জ্ঞান অর্জনের অন্যতম মাধ্যম হতে যাচ্ছে এই সংবিধান জিপিটি বা কনস্টিটিউশন জিপিটি। জিব্রেইন কনস্টিটিউশন জিপিটি একটি উন্নত এআই মডেল, যা বাংলাদেশের সংবিধান সম্পর্কিত যেকোন প্রশ্নের উত্তর দিতে সক্ষম। এই টুলটির মাধ্যমে খুব সহজেই ও অল্প সময়ের মাঝে ছাত্র ছাত্রীরা, নাগরিক কিংবা আইনজীবীরা বাংলাদেশের সংবিধান ও এর সংশোধনী সম্পর্কে জানতে কিংবা গবেষনা করতে পারবেন। আইনজীবীদের জন্য এটি আইনি গবেষণা এবং মামলার প্রস্তুতির ক্ষেত্রে দক্ষতা বৃদ্ধি করবে। নাগরিকদের তাদের অধিকারের ব্যাপারে সচেতন করবে এবং ছাত্রদের জন্য এটি একটি অমূল্য শিক্ষামূলক সম্পদ হিসেবে কাজ করবে।

এআই-ভিত্তিক জিপিটি প্লাটফর্ম ‘জি-ব্রেইন (GBrain)’ এর দ্বিতীয় মডেলটি হলো- বাজেট জিপিটি (BudgetGPT)। এই মডেল জাতীয় বাজেটের জটিল বিষয়গুলো সহজে বুঝতে সাহায্য করে। আমাদের দেশের অর্থনৈতিক নীতিমালা ও কৌশল সম্পর্কে জানা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বাজেট জিপিটি মডেলটি নীতিনির্ধারক, অর্থনীতিবিদ এবং সাধারণ মানুষের জন্য উপকারী, যারা বাজেট বরাদ্দ, অর্থনৈতিক নীতিমালা এবং অর্থনৈতিক কৌশল সম্পর্কে জানতে আগ্রহী। এটি FY-2024-25 বাজেটের বিশ্লেষণ এবং অর্থনৈতিক সিদ্ধান্তের প্রভাব সম্পর্কে তথ্য সরবরাহ করে। এর মাধ্যমে ব্যবহারকারীরা বাজেটের বিভিন্ন দিক সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন এবং দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি সম্পর্কে ধারণা পাবেন।

এআই-ভিত্তিক জিপিটি প্লাটফর্ম ‘জি-ব্রেইন (GBrain)’ এর তৃতীয় মডেলটি হলো- স্টার্টআপ জিপিটি (StartupGPT)। স্টার্টআপ জিপিটি এমন একটি উদ্ভাবনী টুল, যা নিত্যনতুন স্টার্টআপ ইকোসিস্টেমকে তহবিল, যোগ্যতা এবং প্রয়োজনীয় তথ্য সম্পর্কে বিস্তারিত নির্দেশনা প্রদান করে। স্টার্টআপ জিপিটি উদ্যোক্তা এবং বিনিয়োগকারীদের জন্য অমূল্য সব তথ্য সরবরাহ করবে, এর মাধ্যমে অনায়াসে কোথায় কোথায় ফান্ড আছে, কারা কারা এর যোগ্য হবেন, কী কী ডকুমেন্ট লাগবে এই ধরনের সমস্ত প্রয়োজনীয় তথ্য এক নিমিষেই জানতে পারবেন। ধরুন কারো সিড স্টেজে অফিস স্পেসের প্রয়োজন হলো, তিনি যদি স্টার্টআপ জিপিটি-কে জিজ্ঞেস করেন, তাহলে এটি তাকে জানাবে কে কোথায় কিভাবে অফিস স্পেস অফার করছে। এটি ভেঞ্চার ক্যাপিটাল, অ্যাঞ্জেল ইনভেস্টমেন্ট, সরকারি অনুদান এবং ঋণের মতো তহবিলের বিষয়ে প্রশ্নের উত্তর দেয়, যা স্টার্টআপগুলিকে তাদের তহবিল সংগ্রহ অনেক সহজ করতে সাহায্য করে।

ডিজিটাল গ্রহণযোগ্যতা এবং উদ্যোক্তা তৈরির মাধ্যমে, স্টার্টআপ জিপিটি স্মার্ট উদ্যোক্তা তৈরির মাধ্যমে ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনের ভিশন বাস্তবায়নে সহায়তা করবে।

আজকের খুলনা
আজকের খুলনা